সাইবার অপরাধী খুঁজুন

ইন্টারনেটের বিশ্বে সাইবার অপরাধীদের থাবার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধীরা নিজের পরিচয় লুকিয়ে রাখে। তাই, আজকে সাইবার অপরাধীর পরিচয় উদঘটন করা নিয়েই কিছু পদ্ধতি উল্লেখ করছি-

Exif data ব্যাবহার করা

ক্যামেরায় ছবি তোলার সময় সেই ছবির সাথে বেশকিছু তথ্য যুক্ত হয়ে যায়, যাকে exif data বলে। এই exif data -র মধ্যে geolocation সহ ক্যামেরা বা, মোবাইলের বেশকিছু তথ্য থাকে। ফলে, অপরাধীর কাছ থেকে কোন ছবি আদায় করতে পারলে সেই ছবির exif data বিশ্লেষণ করে অপরাধীর ঠিকানা জানা যেতে পারে। এর মাধ্যমে যেই গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি জানা যাবে সেটা হচ্ছে- অপরাধী আপনার নিজের এলাকাতেই থাকে কিনা?

তবে, এখানে ২ টি বিষয় মাথায় রাখবেন-

  • exif data সহজেই delete করা যায়। ফলে, অপরাধী আপনাকে ছবি পাঠালেও exif data না থাকলে এসব তথ্য পাওয়া যাবে না।
  • ফেসবুকে সাধারনত ছবির exif data মুছে দেওয়া হয়। তাই, ছবি নিতে হলে Gmail বা, এমন কোন মাধ্যম ব্যাবহার করতে হবে- যেটি exif data মুছে ফেলে না।

এমন হতে পারে যে, ছবিটি যেই কোম্পানির মোবাইল দিয়ে তোলা হয়েছে, অপরাধীর লোকেশনে সেই কোম্পানির মোবাইল শুধুমাত্র ১ টাই রয়েছে। ফলে, এই exif data যুক্ত file সংগ্রহ করতে পারলে প্রশাসনের জন্য অপরাধীকে খুঁজে বের করা সহজ হবে।

Meta data ব্যাবহার করা

প্রত্যেক file এর সাথেই অসংখ্য পরিমাণ meta data থাকে। Windows কম্পিউটারে যেকোন folder -এ প্রবেশ করে উপরে থাকা drop down menu তে right click করে More -এ ক্লিক করলেই অসংখ্য meta data দেখার অপশন চলে আসবে। ফলে, অপরাধীর থেকে ছবি বা, অন্য কোন file নিতে পারলে সেই file এর এসব তথ্য থেকে সেই অপরাধী সম্বন্ধে অনেক গুরুত্বপুর্ন তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে।

নিজের ওয়েবসাইট ব্যাবহার করা

আপনি নিজের ওয়েবসাইট ব্যাবহার করেও অপরাধীর ডিভাইস ও লোকেশন সম্বন্ধে কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। যেমন- আপনার ওয়েবসাইটে এমন একটি page create করলেন, যেই page এর লিংক কেউই জানে না। এখন সেই লিংক যদি অপরাধীকে message করে পাঠান তাহলে অপরাধী যখন সেই লিংকে ক্লিক করবে তখন আপনার ওয়েব সার্ভারে অপরাধীর ডিভাইস থেকে request আসবে এবং সেখানে অপরাধীর বেশকিছু তথ্য পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও পরিস্থিতি ভেদে আরও অনেক পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে, সকল পদ্ধতিই সাধারন নাগরিক হিসেবে করা সম্ভব না। বরং, কিছু কিছু বিষয় একমাত্র প্রশাসনের দ্বারা করা সম্ভব।

পরিশেষে একটি কথাই বলবো- সাধারন অপরাধীর চেয়ে সাইবার অপরাধীরা নিজেদের চিহ্ন বেশি পরিমাণে ফেলে যায়। কারন, এসব অপরাধীদের অধিকাংশই জানে না- প্রতি মুহূর্তে কম্পিউটার সিস্টেমের কতো জায়গায় তাদের চিহ্ন লিপিবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই, সাইবার জগতে অপরাধীদের থাবার শিকার হলে ঘাবড়ানো যাবে না; আবার, আইন নিজের হাতেও তুলে নেওয়া যাবে না। বরং, অপরাধীর ব্যাপারে সাধ্য মতো তথ্য সংগ্রহ করে প্রশাসনের কাছে যেতে হবে। আসুন, আমরা সাইবার অপরাধকে ঘৃণা করি, সচেতন থাকি।

Leave a Comment